এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > শিক্ষক আন্দোলনের বড় সাফল্য – শিক্ষকের ঐক্যের কাছে পিছু হটে অবশেষে অনুমোদিত এই ফান্ড – জানুন বিস্তারিত

শিক্ষক আন্দোলনের বড় সাফল্য – শিক্ষকের ঐক্যের কাছে পিছু হটে অবশেষে অনুমোদিত এই ফান্ড – জানুন বিস্তারিত


যত দিন যাচ্ছে ততই যেন সুসংহত অথচ দৃঢ় প্রত্যয়ী পথে রাজ্য-রাজনীতিকে আন্দোলনের পথ দেখাচ্ছেন রাজ্যের শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া বিপুল পরিমান ডিএ, পে কমিশনও নজিরবিহীনভাবে দীর্ঘসূত্রিতার রেকর্ড ভেঙে সাড়ে তিন বছরের মেয়াদের দিকে এগোচ্ছে। এদিকে, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের যোগ্যতা চার বছরের বাড়াতে বাধ্য করে কেন্দ্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করিয়ে নিলেও দেখা নেই পিআরটি স্কেলের!

আর সেই কাঙ্খিত পিআরটি স্কেল নিয়ে দাবি জানিয়ে আন্দোলন করতে গেলে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী গায়ে লাগিয়ে দিয়েছেন – ‘অযোগ্য’ লেবেল! এমনকি তার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে শিক্ষক নেতাদের জেলে পর্যন্ত যেতে হয়েছিল! আর তাই, অভিনব পদ্ধতিতে অভিনব এক প্রতিবাদ কর্মসূচি নেন রাজ্যের শিক্ষকরা। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের চাঁদায় যে বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে – রাজ্যের শিক্ষকরা ঠিক করেন সেই চাঁদা এবার বয়কট করা হবে।

প্রতিবছরের মত এবছরেও শিক্ষকদের থেকে ‘অবৈধভাবে’ চাঁদা নেওয়ার প্রতিবাদ করেছিল শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ, আরেক শিক্ষক সংগঠন UUPTWA-এর সহযোগিতায়। আর সেই কর্মসূচি শুরু করতেই বিপুল সাড়া পরে যায় রাজ্যের শিক্ষকদের মধ্যে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এসআই বা ডিআইদের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষকরা নিজেদের অবস্থানের কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতা মইদুল ইসলামের কথায়, ০০ বা ৫০০ – টাকার অঙ্কটা বড় বিষয় নয়, ব্যাপারটা হল নৈতিকতার। আমাদের বিরুদ্ধে একটা অদ্ভুত প্রচার করা হচ্ছে যে শিক্ষকরা নাকি স্কুলক্রীড়ার বিরুদ্ধে! সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা – আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি, শারীরিক এবং মানসিক – যেভাবে প্রয়োজন আমরা সাহায্য করে এই স্কুল ক্রীড়া সফল করতে রাজি আছি। কিন্তু, কোনোমতেই কোনো আর্থিক সাহায্য করে নয়। রাজ্য সরকার চারিদিকে খেলা-মেলা-উৎসব-কার্নিভাল করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। তাই, শিশুদের এই ক্রীড়া-উৎসব তো সরকারি অনুদানেই হওয়া উচিত!

রাজ্যের শিক্ষকরা এই চাঁদা বয়কট ছাড়াও বিষয়টি সরাসরি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যাকে জানান। যদিও সেইসময় পার্থবাবু জানান – এই বিষয়ে তিনি সাময়িক অবগত নন। কিন্তু, একই সাথে কথা দেন বিষয়টি নিয়ে তিনি ভেবে দেখছেন। কিন্তু, এরপরেও এই চাঁদা বয়কট নিয়ে শিক্ষকদের উপর কম চাপ সৃষ্টি হয় নি! প্রশাসনিক চাপ তো ছিলই – তার সাথেই, কখনো স্কুলে কুরুচিকর পোস্টার লাগিয়ে দেওয়া বা এক ‘বিশেষ’ রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের ধমক-চমক চলছিল ক্রমাগত।

কিন্তু, অবশেষে শিক্ষকদের এই অভিনব আন্দোলনের জেরে – এল বহু কাঙ্খিত জয়। পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে যা কোনোদিন হয় নি – সেই বিদ্যালয় ক্রীড়ার জন্য এবার অনুমোদিত হয়ে গেল ফান্ড। সূত্রের খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিপিও সর্বশিক্ষা মিশন থেকে প্রত্যেক বিদ্যালয়ের জন্য খেলা বাবৎ চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত ৩,০০০ ও অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ৭,০০০ টাকা করে অনুমোদন করে দিয়েছেন। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমত খুশির হাওয়া রাজ্যের শিক্ষক মহলে – একবাক্যে সকলেই মেনে নিচ্ছেন, এটি আসলে শিক্ষক ঐক্যের ও আন্দোলনের বড় জয়।

এই প্রসঙ্গে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতা মইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে জানান, আমরা হলাম শিক্ষক সমাজ – আমাদের জাতির মেরুদন্ড বলা হয়। সুতরাং অন্যায়ের প্রতিবাদ করা – কিন্তু, তা সম্পূর্ণভাবে স্থিরতা বজায় রেখে, এটাই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য ও কর্তব্য। আমাদের দাবি ও প্রতিবাদ যে সঠিক ছিল – এই ঘটনায় তা প্রমাণিত। এই জয় – শিক্ষক আন্দোলনের বড় জয়। আগেও বলেছি, আবারো বলছি – আন্দোলনই দাবী আদায়ের একমাত্র পথ। আমরা একইভাবে আগামীদিনেও যেখানে অন্যায় দেখব – সেখানেই এইভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব, সেই লক্ষ্যেই শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ এগিয়ে চলেছে।

দক্ষিণ দিনাজপুরের ডিপিওর স্কুলের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে এই সেই নির্দেশিকা – যা ঘিরে খুশির হাওয়া রাজ্যের শিক্ষক মহলে।
আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!