হাইকম্যান্ড নাম খারিজ করলেও, এত সহজে কর্তৃত্ব ছাড়ছেন না বুঝিয়ে দিলেন ডালুবাবু মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য February 7, 2019 দলের হাইকমান্ডার রাহুল গান্ধীর নির্দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে মালদহ জেলা কংগ্রেসে কোতোয়ালির অবিসংবাদিত কর্তৃত্ব শেষ হলেও তাকে মানতে চাইছেন না কোতোয়ালির প্রবীণ সদস্য তথা সংসদ সদস্য আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)। গতকাল জেলা কংগ্রেসের সাংবাদিক বৈঠকে এসে নতুন জেলা কংগ্রেস সভাপতি বক্তব্য থামিয়ে এমনটাই বুঝিয়ে দিলেন ডালু বাবু। প্রসঙ্গত,সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি ডালুবাবুকে উপেক্ষা করে মোস্তাক আলমকে নতুন জেলা সভাপতি ঘোষণা করার পর গতকাল মালদহ জেলা কংগ্রেসের সদর দপ্তর হায়াতভবনে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন মোস্তাক আলম। সেখানেই নতুন জেলা সভাপতির বক্তব্যকে মাঝপথে থামিয়ে ডালুবাবু বলেন,’আমি প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি। মালদহ সহ ১০টি জেলার সংগঠন দেখার দায়িত্ব আমার। সর্বভারতীয় কংগ্রেস যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাকে জানিয়েই নিয়েছে। একজন দু’টি পদে থাকতে পারেন না এই বিষয়টি আগেও একবার সভাপতি নির্বাচনের সময় এসেছিল।’ পাশাপাশি তিনি এটা বলারও চেষ্টা করেন যে আগে গনিখান চৌধুরীর পরিবারের বাইরের একাধিক ব্যক্তি মালদহের জেলা সভাপতি হয়েছেন। তবে এতোকিছু বলার পর তিনি নিজের নাম কেন সভাপতি হিসাবে প্রস্তাব করেছিলেন এ ব্যাপারে কোনো সাফাই দেননি তিনি। তবে তিনি গর্জে উঠে এটা বলেন যে,’সর্বভারতীয় নেতৃত্ব আমাকেই জানিয়েছিল যে প্রদেশের কার্যকরী সভাপতি ও জেলা সভাপতি একইজনকে করা যাবে না।’ প্রকাশ্যে ডালুবাবুর ক্ষমতার রাশ ধরে রাখার এই ব্যর্থ প্রয়াস দেখে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে মালদহ জেলা কংগ্রেসে কোতোয়ালির কর্তৃত্ব উপড়ে ফেলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাইকমান্ডার। তাকেই আরো চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিল কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতার সাফাই। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে,বক্তব্য রাখতে গিয়ে নতুন জেলা সভাপতি মোস্তাক আলম বলেন,’কঠিন সময়ে দায়িত্ব নিয়েছি। বিশ্বাসঘাতকদের জবাব দেওয়ার সঙ্গে দলকে সংগঠিত করতে হবে।’ কৌশলে এদিন ডালুবাবু’র নেতৃত্বেই দল চলবে বলে তিনি প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন। তবে ইশা খান চৌধুরী যে উত্তর মালদহের প্রার্থী হবেন,এ ব্যাপারে সংশয় রয়েছে বলেও জানিয়ে দেন তিনি। ডালুবাবুকে পাশে বসিয়েই তিনি ইশা খান সম্পর্কে একথাগুলো বলেন। জানান,ইশা খান চৌধুরীকে উত্তর মালদহের প্রার্থী করার জন্যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মাত্র। এখনো এব্যাপারে হাইকমান্ডারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে ইশা খান বা অন্য যে প্রার্থী লোকসভা ভোটে দাঁড়াক না কেন সকলকে একসঙ্গে লোকসভা ভোটযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে বলে জানান তিনি। নিজের ছেলের উত্তর মালদহের প্রার্থী পদ পাওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার পরেও বিশেষভাবে সক্রিয় হতে পারেননি ডালুবাবু। অন্যদিকে,আপত্তি সত্ত্বেও নতুন জেলা সভাপতির বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে অস্তিত্বসংকটে পড়ে গেলেন কোতোয়ালির এই প্রবীণ নেতা। উল্লেখ্য,সম্প্রতি মৌসম নূর কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর গত ২ ফেব্রুয়ারি মালদহে বৈঠকে বসেছিল মালদহ জেলা কংগ্রেস। সেখানেই ডালুবাবু নিজেকে এবং তাঁর পছন্দের দুজনকে কার্যকরী সভাপতি করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে আপত্তি জানান মোস্তাক আলম সহ একাধিক নেতা। শেষ পর্যন্ত কোতোয়ালির বাইরে থেকে মোস্তাক আলমকে সভাপতি করে দেওয়া হল রাহুল গান্ধীর নির্দেশ মতো। এই প্রেক্ষিতে লোকসভা ভোটের মুখে মৌসমবিহীন কোতোয়ালির গুরুত্বই এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে। আপনার মতামত জানান -