এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > শান্তিবাহিনীর নামে মুকুল ঘনিষ্ঠকে তৃণমূলের ‘বখাটে’ ছেলেদের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বেধড়ক মার

শান্তিবাহিনীর নামে মুকুল ঘনিষ্ঠকে তৃণমূলের ‘বখাটে’ ছেলেদের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বেধড়ক মার


লোকসভা নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গর্বের সঙ্গে নাকি জানিয়েছিলেন – বাংলায় কোথাও নাকি বিজেপি নেই! অন্যদিকে বিজেপির দাবি ছিল বাংলা থেকে এবারে তারা অন্তত ২৩ টি লোকসভা আসন জিতবে। একইসঙ্গে বিজেপির দাবি ছিল – উনিশে হাফ আর একুশে সাফ! কিন্তু বিজেপির দাবিকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল নেত্রী জানিয়েছিলেন – বাংলা দখল করতে গেলে, বিজেপি নাকি দিল্লি থেকেই উৎখাত হয়ে যাবে!

কিন্তু গত ২৩ শে মে লোকসভার ফলাফল সামনে আসতেই দেখা গেল, তৃণমূল নেত্রীর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে। ৪২ এ ৪২ করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন তো মুখ থুবড়ে পড়েছেই, একইসঙ্গে বাংলা থেকে ১৮ টি আসন জিতে নিয়ে বিজেপি কার্যত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে পরিবর্তনের পরিবর্তন করার দিকে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে আছে। সেই ফলাফল দেখে তৃণমূল নেত্রী কার্যত দুদিন বাড়ি থেকেই বেরোননি। আর তারপর দলীয় নেতাদের নিজের কালীঘাটের বাড়িতে ডেকে বৈঠক করে, তারপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

সেই সাংবাদিক বৈঠক বিতর্কে মোড়া হলেও, তারপর থেকেই নিজের দলের ভেঙে পড়া সংগঠনকে চাঙ্গা করতে একের পর এক পদক্ষেপ নেন। সেসব নিয়েও অবশ্য কম বিতর্ক হয় নি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ‘বিজেপির বহিরাগতদের’ আটকাতে পাড়ায় ‘শান্তি বাহিনী’ গঠন। আর তৃণমূল করার জন্য পাড়ার ‘বখাটে’ ছেলেদের কোনো না কোনো ‘কাজ’ নিয়ে দলে নিয়ে আসা। বিজেপির স্পষ্ট অভিযোগ ছিল ‘বখাটে’ ছেলে বলতে মুখ্যমন্ত্রী ‘সমাজবিরোধীদের’ দিয়ে দল ভরানোর কথা বলছেন!

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এবার বিজেপির তরফে বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল – পাড়ায় পাড়ায় মুখ্যমন্ত্রী যে শান্তিবাহিনী গঠন করেছেন, তা আদতে সমাজবিরোধীতে ভর্তি। আর এই সমাজবিরোধীদের কাজই হল, স্থানীয়স্তরে যাঁরা বিজেপি করছেন, তাঁদের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানো ও মারধর করা! গতকাল দমদম লোকসভার অন্তর্গত বরানগরে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে পরিচিত রাজীব মিশ্রকে প্রকাশ্য রাস্তায় ঘিড়ে ধরে একদল যুবক। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এইসব যুবকদের প্রায় প্রত্যেকের হাতেই ছিল আগ্নেয়াস্ত্র।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, ওই যুবকরা নিজেদের স্থানীয় ‘শান্তিবাহিনীর’ সদস্য বলে দাবি করে, রাজীববাবুকে ঘিড়ে ধরে প্রথমে রীতিমত শাসাতে থাকে। তাদের বক্তব্য ছিল, ভাটপাড়ায় তোরা মারছিস, এখানে এবার তোদের মারব! আর এরপরেই রাস্তায় ফেলে রাজীববাবুকে বেধড়ক মারতে থাকে ওই যুবকরা। কিল-চড়-লাথি-ঘুষি কিছুই বাদ যায় না, ছিঁড়ে দেওয়া হয় তাঁর পোষাক, সঙ্গে যা টাকা পয়সা ছিল কেড়ে নেওয়া হয় তাও। এরপর বরানগর থানার পেট্রোলিং ভ্যান গিয়ে রাজীববাবুকে উদ্ধার করে।

পরে রাজীববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রায় ৩০-৪০ জন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী আমাকে ঘিড়ে ধরে দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়ের নামে অকথ্য গালিগালাজ করতে থাকে। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে রাস্তায় ফেলে রড-লাঠি দিয়ে মারে। আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে, সঙ্গে একটাই দাবি বরানগরে থাকতে গেলে বিজেপি করা যাবে না! পুলিশ গিয়ে আমাকে না উদ্ধার করত, হয়ত ওই দুষ্কৃতীরা আমাকে প্রাণেই মেরে ফেলত। আমাকে ডাক্তারি পরীক্ষার পর মাথায় সিটি স্ক্যান করাতে হয়েছে। সমগ্র ঘটনা জানিয়ে বরানগর থানায় এফআইআর করেছি।

এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতা মৃণাল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘শান্তিবাহিনীর’ নাম করে স্থানীয় সমাজবিরোধীদের নিয়ে দল গড়েছে শাসকদল, যাদের কাজই হল পাড়ায় পাড়ায় বিজেপি কর্মীদের মারধর করা। রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থেকে শুরু ফিরহাদ হাকিম সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন যে পুলিশ আর কথা শুনছে না! আসলে পুলিশও তো মানুষ, এতদিন শাসকদলের চাপে মিথ্যা কেস দিতে হচ্ছিল! কিন্তু রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়া জোরদার হতেই, পুলিশ নিজের মেরুদন্ড সোজা করে কাজ করতে শুরু করেছে। আর তাই, শান্তিবাহিনীর নাম দিয়ে তৃণমূল নেত্রী গুন্ডাবাহিনী দিয়ে রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন, যা গণতন্ত্রকে ক্রমশ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!