এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেডারেল ফ্রন্ট সত্যিই কি ‘স্বপ্ন’? অঙ্কের হিসেবে কি বলছে?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেডারেল ফ্রন্ট সত্যিই কি ‘স্বপ্ন’? অঙ্কের হিসেবে কি বলছে?

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে যদি সম্মিলিত বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনা যায় তাহলেই বিজেপিকে রুখে দেওয়া সম্ভব। কংগ্রেস যদি নিজের ‘দাদাগিরি’ ছেড়ে এই আঞ্চলিক দলগুলির জোটের সঙ্গে সমঝোতা করে, জোটকে সম্মান দিয়ে তাতে শামিল হয়, তাহলে তো অবশ্যই করে বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরিয়ে সেটা যায়। কংগ্রেসকে এই জোটের নেতৃত্ত্ব দিতে না চাওয়ার কারণ, প্রথমত এই জোটে অনেক শরিক – সবার সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক সুমধুর নয়। দ্বিতীয়ত, কংগ্রেস ভারতের একাধিক রাজ্যে লড়াই করলেও, সেখানকার আঞ্চলিক শক্তি যদি কংগ্রেসের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে কংগ্রেসের খুব বেশি আসনের জয়লাভের সম্ভবনা নেই। আর তাই যখন প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই আঞ্চলিক দলগুলির সাহায্য নিতে হচ্ছে, তখন জোটধর্ম রাখতে কংগ্রেসকে নেতৃত্ত্ব ছেড়ে সহযোগী হতে হবে।

যথারীতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কথার পর, অনেকেই বিশেষ করে বিজেপি সমর্থকেরা হাসাহাসি শুরু করেছেন। কিন্তু সত্যিই কি অবাস্তব কথা বলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ফর্মুলা’ ধরে প্রতিটি রাজ্যের শেষ বিধানসভা বা অন্য নির্বাচনে বিজেপি (এক্ষেত্রে বিজেপি মানে বিজেপি জোট ধরা হল) বিরোধী দলগুলির প্রাপ্ত ভোট শতাংশের হিসাবে তাদের লোকসভায় আসন বন্টন করা হয় এবং সেই প্রাপ্ত সম্মিলিত ভোটের ভিত্তিতে প্রতিটি রাজ্যের চুলচেরা হিসেবে করা হয়, তাহলে সেই অঙ্কের হিসেবে কি বলছে একনজরে দেখে নেওয়া যাক –

১. উত্তর প্রদেশ – ৮০
সপা – ২৬
বসপা – ১১
কংগ্রেস – ৪
বিজেপি – ৩৯

২. মহারাষ্ট্র – ৪৮
শিবসেনা – ১০
কংগ্রেস – ৭
এনসিপি – ৭
বিজেপি – ২৪

৩. পশ্চিমবঙ্গ – ৪২
তৃণমূল কংগ্রেস – ৪২

৪. বিহার – ৪০
আরজেডি – ১৫
কংগ্রেস – ৫
বিজেপি – ২০

৫. তামিলনাড়ু – ৩৯
ডিএমকে – ১৮
কংগ্রেস – ১
এআইএডিএমকে – ২০

৬. মধ্যপ্রদেশ – ২৯
বসপা – ১
কংগ্রেস – ১৪
বিজেপি – ১৪

৭. কর্ণাটক – ২৮
জেডিএস – ৫
কংগ্রেস – ১০
বিজেপি – ১৩

৮. গুজরাট – ২৬
কংগ্রেস – ১৩
বিজেপি – ১৩

৯. অন্ধ্রপ্রদেশ – ২৫
টিডিপি – ১৭
বিজেপি – ৮

১০. রাজস্থান – ২৫
কংগ্রেস – ১২
বিজেপি – ১৩

১১. ওড়িশা – ২১
বিজেডি – ৯
কংগ্রেস – ১
বিজেপি – ১১

১২. কেরালা – ২০
বামফ্রন্ট – ৮
কংগ্রেস – ৬
বিজেপি – ৬

১৩. তেলেঙ্গানা – ১৭
টিআরএস – ১৪
বিজেপি – ৩

১৪. আসাম- ১৪
কংগ্রেস – ৪
বিজেপি – ১০

১৫. ঝাড়খন্ড – ১৪
জেএমএম – ৫
কংগ্রেস – ২
বিজেপি – ৭

১৬. পাঞ্জাব – ১৩
আপ – ২
কংগ্রেস – ৫
বিজেপি – ৬

১৭. ছত্তিশগড় – ১১
কংগ্রেস – ৪
বিজেপি – ৭

১৮. হরিয়ানা – ১০
লোকদল – ৩
কংগ্রেস – ৩
বিজেপি – ৪

১৯. দিল্লি – ৭
আপ – ৪
বিজেপি – ৩

২০. জম্মু কাশ্মীর – ৬
ন্যাশনাল কনফারেন্স – ১
কংগ্রেস – ১
বিজেপি – ৪

২১. উত্তরাখন্ড – ৫
কংগ্রেস – ১
বিজেপি – ৪

২২. অরুণাচল প্রদেশ – ২
বিজেপি – ২

২৩. গোয়া – ২
বিজেপি – ২

২৪. মনিপুর – ২
বিজেপি – ২

২৫. মেঘালয় – ২
বিজেপি – ২

২৬. ত্রিপুরা – ২
বিজেপি – ২

২৭. আন্দামান – ১
বিজেপি – ১

২৮. চন্ডীগড় – ১
বিজেপি – ১

২৯. দাদরা নগর – ১
বিজেপি – ১

৩০. লাক্ষাদ্বীপ – ১
কংগ্রেস – ১

৩১. মিজোরাম – ১
বিজেপি – ১

৩২. নাগাল্যান্ড – ১
বিজেপি – ১

৩৩. পন্ডিচেরী – ১
কংগ্রেস – ১

৩৪. সিকিম – ১
বিজেপি – ১

অর্থাৎ বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর জোটের হাতে থাকছে মোট ২৮৫ টি আসন, আর বিজেপি জোটের হাতে থাকছে ২৫৮ টি আসন। অর্থাৎ সবমিলিয়ে দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু অলীক স্বপ্ন দেখছেন না, কোথাও গিয়ে তার একটা বাস্তবতা আছে। কিন্তু উল্টোদিকে আবার রাজনীতিতে সবসময় অঙ্কের হিসেবে মেলেনা, তাই একে ধ্রুব সত্য মেনে নেওয়ার কোনো দরকার নেই, কিন্তু এই সমীকরণ দেখিয়ে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাস্তবের মাটিতে পা দিয়েই কিন্তু ২০১৯ এর অঙ্ক কষতে শুরু করে দিয়েছেন।

একনজরে দেখে নেওয়া যাক সম্মিলিত ফেডারেল ফ্রন্টের শরিকদের আসনসংখ্যা কি দাঁড়াতে পারে –
কংগ্রেস – ৯৫
তৃণমূল কংগ্রেস – ৪২
সপা – ২৬
ডিএমকে – ১৮
টিডিপি – ১৭
আরজেডি – ১৫
টিআরএস – ১৪
বসপা – ১২
শিবসেনা – ১০
বিজেডি – ৯
এনসিপি – ৭
জেডিএস – ৫
জেএমএম – ৫
আপ – ৬
লোকদল – ৩
ন্যাশনাল কনফারেন্স – ১

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!