বিজেপিতে উন্নতি চাইলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়, আর তৃণমূলে মমতা-অভিষেককে তেল দিতে হয়: জয় ব্যানার্জি বর্ধমান বিশেষ খবর রাজ্য September 1, 2018 ভারতীয় জনতা পার্টির ওবিসি মোর্চার ডাকে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার রবীন্দ্র পরিষদ ভবনে ‘সামাজিক ন্যায় উৎসবের’ আয়োজন করা হয়। সেখানে মুখ্য বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ মেম্বার ও রাজ্য বিজেপির অন্যতম শীর্ষনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানটি গত ৩০ শে আগস্ট হওয়ার থাকলেও বিশেষ কারণে দিন পরিবর্তিত হয়ে তা আজ হয়। সেই প্রসঙ্গে, প্রথমেই বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের দাপুটে নায়ক জয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, যেহেতু তিনি কাটোয়ার মানুষের সঙ্গে কাজ করতে ও তাঁদের মনোভাব বুঝতে খুব ইচ্ছুক – তাই শত ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি ছুটে গেছেন। এরপরেই এই মুহূর্তে গেরুয়া শিবিরের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ জয় ব্যানার্জি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমন করার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির পার্থক্যও বুঝিয়ে দেন লোকে-লোকারণ্য হয়ে থাকা ভবনকে। এই প্রসঙ্গে বাংলার একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকেও তীব্র আক্রমন করেন তিনি। জয়বাবু বলেন, বিজেপি যাঁরা করেন তাঁদের স্বপ্ন থাকে ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ মেম্বার হওয়া। অনেকে হয়ত তাঁদের ৩৫ বছরের রাজনৈতিক জীবন দিয়েছেন সেখানে স্থান পাবার জন্য। কিন্তু আমি ৪ বছরেই তা হয়ে গেলাম। এরপরেই এই ‘অ্যাচিভমেন্টের’ কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এই জিনিসটা কিন্তু প্রমান করে দিল কঠোর পরিশ্রম এবং একটা মানুষের সততা থাকলে তাঁকে কিন্তু বিজেপি ফেলে রাখবে না। ঠিক উপরের দিকে তুলে নেবে – কেননা এইটাই বিজেপির ঐতিহ্য। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসকে দেখুন – মমতা ব্যানার্জি, অভিষেক ব্যানার্জিকে যে যত তেল মারছে সে তত উপরে উঠে যাচ্ছে! আবার তেলটা শুকিয়ে যাচ্ছে নীচে নেমে যাচ্ছে! আমাদের পার্টি কিন্তু এরকম পার্টি নয় – আমাদের পার্টি ‘রেজিমেন্ট’ পার্টি, তাই এখানে সততা আর কঠিন পরিশ্রম দেখা হয়। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে তাঁর তীব্র কটাক্ষের হাত থেকে রক্ষা পান না বাংলার ‘বুদ্ধিজীবীরাও’ – চূড়ান্ত আক্রমণাত্মক ঢঙে তিনি বলেন, বাংলায় কিছু ‘স্বঘোষিত’ বুদ্ধিজীবী আছে, যাঁদের মাঝে মাঝে টিভির পর্দায় দেখা যায়। এরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে বলে – হিন্দু-ব্ৰাহ্মণ হয়েও ধর্মতলায় গিয়ে গরুর মাংস খান! এইসব বুদ্ধিজীবীদের আজ মহারাষ্ট্রে কিছু হলে বুক ফেটে যায়, কিন্তু বাংলায় কিছু হলে তাঁরা চুপ করে থাকেন। জানেন তো প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন, প্রকৃতি দেখতে হলে আপনাকে কাশ্মীর যেতে হবে না – ঘরের বাইরে গিয়ে কলাপাতার উপর শিশির বিন্দু আর তাতে রোদের চমকানি দেখতে পেলেই প্রকৃতি দেখা হয়ে যাবে। জয় বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর সদ্য নৃশংসভাবে খুন হয়ে যাওয়া ব্যাঙ্ককর্মী পার্থ চক্রবর্তীর কথা তোলেন। তিনি বুদ্ধিজীবীদের দিকে প্রশ্ন তোলেন – এরকম নৃশংসভাবে বাংলার বুকে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আপনারা প্রতিবাদ করেন না, মোমবাতি মিছিল করেন না! কিন্তু মহারাষ্ট্রে কি হল, মোদীজি কি বললেন – আপনারা পরে রয়েছেন তা নিয়ে! আজ চারিদিকে কি হচ্ছে না দেখে পশ্চিমবঙ্গের দিকে মন দিন! বাংলায় আজ ধর্ষণ-রাহাজানি-চুরি-ডাকাতি-খুন – কিনা হচ্ছে! আপনারা নিজের মাকেই চিনতে পারলেন না তো পরের মাকে কি চিনবেন? এরপর পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও তিনি তাঁর দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলার আগে গোটা দেশে বা বিশ্বে একটা আলাদা মান ছিল, কিন্তু তা পরে গিয়ে তার জায়গা নিয়েছে সন্ত্রাস-ধর্ষণ-রাহাজানি-তোলাবাজি! আর তাই পশ্চিমবঙ্গকে আবার ‘সোনার-বাংলা’ করতে হলে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্ত্বে বিজেপির সরকারকে বাংলায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাকে জগৎসভায় আবার শ্রেষ্ঠ আসন দিতে হলে – সবাই মিলে একজোট হয়ে লড়াই করে বাংলা থেকে ‘দস্যু’ তৃণমূলকে উৎখাত করতে হবে। জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূলের বড় বড় নেতা-মন্ত্রীদের পাড়ার ওষুধের দোকানে গিয়ে খবর নিন, দেখবেন তাঁরা শুধু দেদার ঘুমের ওষুধ খাচ্ছেন। ওষুধ না খেয়ে তাঁরা এখন ঘুমোতেই পারেন না, আর ঘুমিয়েও শুধু বিজেপির ভূত দেখেন! আমডাঙা প্রসঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে আক্রমন করে তিনি বলেন, খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন বিএসএফ নাকি বর্ডার পার করে অস্ত্র এনে দিয়েছে! আপনি তো ওই এলাকার ‘বাঘ’ – ওই অস্ত্র সাত-সাতটা থানা পেরিয়ে কি করে আমডাঙায় এল? আপনার পুলিশ-প্রশাসন কি করছিল? অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন – বিএসএফের ধর-পাকড়ের কোনো ক্ষমতা নেই, এটা করবে পুলিশ! মানে মুখ্যমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রী একে অপরের উল্টো কথা বলছেন! জয়বাবু এরপর বলেন, বাংলার সবটাকা লুটে নিয়ে গেছে বামফ্রন্ট, যেটুকু পড়েছিল লুটে নিচ্ছে তৃণমূল! আমার তো ভয় লাগছে ২০২১ সালে আমরা ক্ষমতায় এলে কি দিয়ে সরকার চালাবো! তৃণমূল এতদিন সন্ত্রাস করত – আমাদের ছোটোখাটো নেতাদের মারত। কিন্তু দুদিন আগেই আমাদের হাওড়ার জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিককে মেরেছে। এবার নাকি বলছে রাজ্য নেতাদের মারবে – আপনাদের বিনীতভাবে বলছি, আমরাও কিন্তু হাতে চুড়ি পরে বসে নেই! খোদ অমিত শাহ বলে গেছেন, এখন আপনারা আর আমাদের জানাবেন না – কে মার খেলেন! আমাদের জানাবেন – আপনারা কাকে মারলেন, মার খেয়ে নয় – মার দিয়ে উচ্চনেতৃত্ত্বকে ফোন করবেন, গলায় এসে মালা পরিয়ে যাব। https://www.youtube.com/watch?v=v-SehrCE9KE আপনার মতামত জানান -