এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আগামী ২৬ তারিখ শুধু মানুষ বা গাড়ি কেন, গাছের একটি পাতাও নড়বে না: জয় ব্যানার্জি

আগামী ২৬ তারিখ শুধু মানুষ বা গাড়ি কেন, গাছের একটি পাতাও নড়বে না: জয় ব্যানার্জি


ইসলামপুরের ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় গুলিচালনা এবং তারফলে তিনজন ছাত্রের মৃত্যুতে রীতিমত ঝড় উঠে গেছে রাজ্য-রাজনীতিতে। শাসকদল যখন এই ঘটনার পিছনে আরএসএস বা বিজেপির হাত দেখছে, তখন বিরোধীদের সম্মিলিত আক্রমনের মুখে রাজ্য সরকার। এমনকি, এই ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠে গেছে। আর এইবার সেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে আগামী ২৬ শে সেপ্টেম্বর রাজ্যজুড়ে বনধ ডাকল বিরোধী দলগুলি। কি পরিস্থিতিতে কেন এই বনধ এবং রাজ্য সরকারের আগাম হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও কিভাবে বা কেন সেই বনধ সফল হবে তা নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম মুখ জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।

ইসলামপুরের সামগ্রিক ঘটনাকে তীব্র নিন্দায় ভরিয়ে দিয়ে জয়বাবুর বক্তব্য, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস যে ভাষা দিবস পালন করে সেখানে দাঁড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারেবারেই বলে এসেছেন – যে সেই দিনের ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক, দুঃখজনক ও নক্কারজনক ঘটনা। আর তাই, প্রতি বছর নিয়ম করে উনি এই ভাষা দিবস পালন করেন – কিন্তু, উনি কি বলতে পারবেন সেই ভাষা-দিবসের থেকে ইসলামপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা কোন অংশে কম নক্কারজনক? বাংলার স্কুলের ছাত্ররা তো ৯৯% বাঙালিই, এমনকি আমরা যখন পড়াশোনা করেছি তখনও তো বাংলাভাষা, আমাদের মাতৃভাষা প্রথমপত্র, ইংরেজি দ্বিতীয়ভাষা হিসাবে পড়ানো হত – যা আবশ্যিক ছিল।

তাঁর আরো বক্তব্য, এরপরে ছিল তৃতীয়ভাষা – যা সাধারণত সংস্কৃত বা হিন্দি হত এবং কোনোমতেই তা আবশ্যিক হত না। যার ইচ্ছা হত নিত, নাহলে নিত না। তাই যেখানে বাঙালি ও বাংলাভাষা অধ্যুষিত, সেখানে স্বাভাবিকভাবেই একজন বাংলা শিক্ষকের দরকার। সেখানে একজন উর্দু শিক্ষককে একবার নিয়োগ করে, পরে তা রদ করে আবার নিয়োগ করা হল এবং তাঁকে প্রায় জোর করে স্কুলে ঢুকিয়ে দেওয়া হল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-আন্দোলন জানায়। আর সেই আন্দোলনের জন্য তিন-তিনটি তরতাজা ফুলের মত প্রাণ, গুলিতে এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গেল! এর থেকে করুন ঘটনা এই বিশ্ব-সংসারে আর কি কিছু হওয়া সম্ভব? এইরকম একটি মৃত্যুই তো মর্মান্তিক – সেখানে তিনটি তাজা প্রাণ, ভাবা যায় না আমরা কোন রাজ্যে বাস করছি! কোন প্রশাসন আমাদের সুরক্ষা দিচ্ছে!

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সামগ্রিক ঘটনায় হৃদয় থেকে নড়ে যাওয়া বাংলা চলচিত্র জগতের এক সময়ের অবিসংবাদী নায়ক বলেন, এই ঘটনা যে কোন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকেই তাঁর হৃদয়ের অন্তরস্থল থেকে নড়িয়ে দেবে! যাঁর শরীরে সামান্য মনুষত্ত্ব এখনও অবশিষ্ট আছে তিনিই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদ জানাবেন – আর তাই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৬ তারিখ শুধু মানুষ বা গাড়ি কেন, গাছের একটি পাতাও সেদিন নড়বে না! বাতাসে যে রক্তের হোলি খেলা চলছে, বারুদের গন্ধে বাতাস যে দূষিত হয়ে গেছে তারই প্রতিবাদের ভাষা আগামী ২৬ তারিখের এই বনধ – প্রশাসনের এই উন্মত্ততার প্রতিবাদে সেদিন সাধারণ নাগরিক থেকে প্রকৃতি সবাই নীরব হয়ে প্রতিবাদ জানাবেই। কোনো পুলিশের লাঠি-বন্দুক বা শাসকদলের নেতা-কর্মীদের ‘দাদাগিরি’ সেদিন মানুষকে এই অরাজকতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে বাধা দিতে পারবে না।

আগামী ২৬ তারিখের বনধ নিয়ে রীতিমত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ গেরুয়া নেতার বক্তব্য, আর তাই এই বনধে বাংলার আপামর জনসাধারণ শামিল হবেন – সেদিন কোনো রাজনীতির রঙ নয়, তিন-তিনটি তরতাজা ফুলের বুকের রক্ত ঝড়ার বিরুদ্ধে গর্জে উঠবেন জনতা-জনার্দন। ইতিমধ্যেই তো শুধু সাধারণ মানুষ নন – এই নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে কলম ধরেছেন অন্যতম বুদ্ধিজীবী মন্দাক্রান্তা সেন, কলম ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এবং তাঁর একাধিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কবীর সুমন। আগামীদিনে আরো সুস্থ মস্তিষ্কের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন বিদ্বজন এবং সাধারণ মানুষ এই চরম অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবেন। প্রতিবাদে মুখর হয়ে কলম ধরবেন বা রাস্তায় নেমে তাঁদের মনুষত্ত্বের পরিচয় দেবেন। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগের বহিঃপ্রকাশ আর এই করুন ঘটনায় নিন্দার লাভাস্রোত সেদিন কিছুতেই জোর করে দমন-পীড়ণের মাধ্যমে আটকাতে পারবেন না এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!