এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > কাঠমানি খাওয়া নেতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠল দলের অন্দরেই, অস্বস্তি বাড়ছে

কাঠমানি খাওয়া নেতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠল দলের অন্দরেই, অস্বস্তি বাড়ছে

লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের খারাপ ফলাফলের পেছনে ঠিক কি কারণ রয়েছে তা নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছিল। সেখানে বাংলায় বিজেপির উত্থান যেমন কারণের তালিকায় ছিল, ঠিক তেমনই দলীয় নেতাদের একাংশের দুর্নীতি এবং কাঠমানি খাওয়াটা যে সাধারণ মানুষ ভালোমত মেনে নিতে পারেননি তাও রিপোর্টে উঠে এসেছিল। আর এই পরিস্থিতিতে সামনের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে দলকে স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতে বেঁধে ফেলতে উদ্যোগী হন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পরই দলীয় নেতাদের দুর্নীতিতে লাগাম টানার কথা বলেছিলেন তিনি। আর সম্প্রতি কলকাতার নজরুল মঞ্চে সমস্ত কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে কেউ কোনো কাঠমানি খেলে তা যে বরদাস্ত করা হবে না, তা জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার জেরে তৈরি হয় চাঞ্চল্য। অনেকেই বলতে শুরু করেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বীকার করে নিচ্ছেন যে, তার দলের নিচুতলার নেতাকর্মীরা এতদিন কাঠমানি নিয়েছেন!

এদিকে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়া নির্দেশের পরই এবার কাঠমানি এবং তোলাবাজিতে যুক্ত নেতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যাতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তার জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের অন্দরেই প্রবলভাবে দাবি উঠতে শুরু করল।

জেলা তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা কালচিনি, কুমারগ্রাম – সর্বত্রই দলের নেতাদের একটা অংশ জমি মাফিয়া, জলাশয় দখল কাঠমানি এবং তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত। যার জেরেই এবার আলিপুরদুয়ারে দলকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে বলে দাবি তাদের। আর তাই এবারে খোদ নেত্রী সেই কাঠমানি খাওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে অবিলম্বে যাতে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তার জন্যই দলে মুখ খুলতে শুরু করলেন অনেক নেতাকর্মীরা বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের প্রবীণ নেতা জহর মজুমদার বলেন, “আমি আগেও বলেছি যে জেলার অনেক নেতা তোলাবাজের সঙ্গে যুক্ত। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী অবিলম্বে তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে আমি তাদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানাব। সাথে সাথে যারা তাদের ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের তথ্যও দলনেত্রীর কাছে তুলে ধরব।”

কিন্তু সত্যিই কি তাহলে তাদের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ রয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলায়! এদিন এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ার টাউন ব্লক কমিটির সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আলিপুরদুয়ার পৌরসভার কোনো কাউন্সিলর তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত নয়। আমাদের শহরে এই সংস্কৃতিই নেই।” একই কথা শোনা গেছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকারের গলাতেও।

এদিন তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ শিরোধার্য।আমাদের এখানে কাঠমানির কোন প্রশ্ন নেই। সব কাজই ই- টেন্ডারের মাধ্যমে হয়। জেলা পরিষদের কোনো সদস্য তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত নন।” এদিকে এই গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল সভাপতি মোহন শর্মাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে আমি জেলার বাইরে রয়েছি। তাই এখন এই ব্যাপারে কিছু বলব না।”

তবে জেলা নেতৃত্ব এই ব্যাপারটাকে যতই এড়িয়ে যাক না কেন, মুখ্যমন্ত্রী তোলাবাজের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরেই যেভাবে আলিপুরদুয়ার জেলার তৃণমূলের একাংশ দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন, তাতে তাদের এই অভিযোগ যে কিছুটা হলেও সত্যি, সেই ব্যাপারে সুর চড়াতে শুরু করেছে বিরোধীরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!