বাউলের ছন্দে মেতে কর্মসংস্থান নিয়ে বড়সড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য January 4, 2019 নতুন ইংরাজি বছরের প্রথম সপ্তাহেই জেলার প্রশাসনিক কাজকর্মের হালহাকিকত জানতে সম্প্রতি বীরভূম পাড়ি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা নেতৃত্বদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করার পাশাপাশি গতকাল বীরভূমের ইলামবাজারে বাউলদের সঙ্গে সুরও মেলালেন তিনি। সেখানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার খানেক বাউলের উপস্থিতিতে সূচনা করলেন বাউল ও লোকসঙ্গীত উৎসবের। অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই বাউলদের সঙ্গে গানে মাতলেন তিনি। পাশাপাশি মৎস দপ্তর,তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর পরিবহন দপ্তর,শ্রম দপ্তর,অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরের ৪ হাজার ২ জন উপভোক্তাদের হাতে বিভিন্ন প্রকল্পের নানা সামগ্রী তুলে দেন। এছাড়া কর্মসংস্থানের স্বার্থে একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনও করলেন তিনি। এছাড়া রাঙামাটি স্পোর্টস ও জঙ্গলমহল কাপ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন খেলায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, বাইক, স্কুটি, LED টিভি, সাইকেল তুলে দেন তিনি। এরপরই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন,”যারা আজ প্রাইজ় পেল, তারা প্রত্যেকে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পাবে।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রসিদ্ধ শ’খানেক বাউল। এঁদের মধ্যে ১২ জন বাউল শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গে জানান,লোকসঙ্গীতে বাংলা একদিন ২৩-২৪ নম্বরে ছিল। কিন্তু আজ নিজস্ব গরিমায় শীর্ষস্থানটি দখল করে নিয়েছে। এই প্রাপ্তিকে তিনি রাজ্যবাসীর গর্ব বলেই ব্যাখ্যা করলেন৷ পাশাপাশি বীরভূম জেলাকে ‘নির্মল জেলা’ বলে ঘোষণাও করলেন। উল্লেখ্য,বীরভূম নিয়ে এতোদিনে রাজ্যের ২৩ টি জেলার মধ্যে ১৬ টি জেলাকেই নির্মল জেলা হিসাবে ঘোষণা করা হল। এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, রাজ্য পুলিশের DG সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ, জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, পুলিশ সুপার শ্যাম সিং,জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরি প্রমুখরা। এসবের পাশাপাশি মঞ্চ থেকে বিজেপি সরকারকে বিঁধতে ভুললেন না তিনি। বললেন,কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজেপি সরকার এতোদিনে লুট করা ছাড়া আর কোনো কাজই করেনি। সাধারণ মানুষকে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসলেও একটা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন নি মোদী৷ আর প্রতিবাদ করতে গেলেই গো-রক্ষার নামে মানুষকে খুন করা হচ্ছে। পুলিশ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ কাউকেই রেহাই দিচ্ছে না বিজেপি। মোদী সরকারের আমলে দেশের কৃষক শ্রমিকরা সবথেকে বেশি বঞ্চনার শিকার হচ্ছে,এমনটা বলেই প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। বলেন,১২ হাজার শ্রমিক,কৃষক আজ দেশে আত্মহত্যা করেছে। এরপর বিজেপিকে কটাক্ষের ভঙ্গিতে বলেন,বাংলার মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছেন না অমিত শাহ-দিলীপ ঘোষেরা। বিভেদের রাজনীতি করে বাংলাকে উত্ত্যক্ত করে তুলছে। সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। মিথ্যা কথা বলে মানুষের মনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তৃণমূলের নামে কুৎসা রটাচ্ছে। এভাবে বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলার পর তিনি দাবী করেন,”শুধু ভারতবর্ষ নয়, সারা পৃথিবীর মধ্যে যদি কোনও শান্তির জায়গা থাকে, তা হল বাংলা।” প্রসঙ্গত,সভা শেষ করে তিনি বল্লভপুরের রাঙাবিতান গেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করেন। এবং আজ তিনি কোলকাতায় ফিরে আসছেন বলেই খবর পাওয়া গিয়েছে প্রশাসনিক সূত্র থেকে। উল্লেখ্য,লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের কর্মসংস্থানকেই প্রধান হাতিয়ার বানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যুবসমাজের ভোটব্যাঙ্কগুলো দখলে রাখতে কর্মসংস্থানই যে এই মুহূর্তে মোক্ষম দাওয়াই সেটা বুঝতে আর বাকি নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই প্রশাসনিক বৈঠক হোক বা কোনো জনসভা, এমনকি কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েও কর্মসংস্থানের প্রসঙ্গ টেনেই নবীন প্রজন্মের মনে জায়গা করে নিতে চাইছেন নেত্রী এমনটাই অভিমত ওয়াকিবহাল মহলের। আপনার মতামত জানান -