এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > আন্দোলন বন্ধের ‘অনুরোধ’ নিয়ে উস্থিকে শিক্ষামন্ত্রীর ফোন, ২৪-এর আন্দোলন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত

আন্দোলন বন্ধের ‘অনুরোধ’ নিয়ে উস্থিকে শিক্ষামন্ত্রীর ফোন, ২৪-এর আন্দোলন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত


দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের বেতন বৈষম্য নিয়ে লড়াই করে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। এর আগে কলকাতায় মহামিছিল থেকে ধর্ণা বা আইনি লড়াই – শিক্ষকদের পিআরটি স্কেলের দাবি আদায়ের জন্য কোনো পথই বাকি রাখেনি সংগঠনটি। এমনকি নিজেদের দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য রাজধানী দিল্লিতে গিয়েও আন্দোলন করেছেন সংগঠনের শীর্ষনেতৃত্ব।

কিন্তু, এখনও পর্যন্ত শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য দূর করার জন্য সেভাবে কোনো সদর্থক পদক্ষেপ নেয় নি রাজ্য সরকার। আর তাই আগামী ২৪ শে জুন নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য উস্থির তরফে কলকাতার রাজপথে এক মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। এমনিতেই লোকসভার ফলাফল ও তার পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার যথেষ্ট চাপে আছে, এর উপরে শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিয়ে যদি এই মহামিছিল হয় তাহলে রাজ্য সরকারের নাভিশ্বাস উঠে যাবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

এমত অবস্থায় গতকাল, হঠাৎ করে বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর আসতে শুরু করে যে শিক্ষকদের বেতন ‘এক স্কেল’ বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এই নিয়ে কোনো সরকারি নির্দেশিকা বা প্রেস বিবৃতি এখনও সামনে আসে নি। কিন্তু, মনে করা হচ্ছিল, শিক্ষকদের আন্দোলনকে স্তিমিত করতেই রাজ্য সরকার এই পদক্ষেপ নিলেও নিয়ে থাকতে পারে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল রাত্রে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক অস্থির রাজ্য সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাসকে ফোন করে জানান শিক্ষামন্ত্রী তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু গতকাল রাত্রে নয়, আজ সকাল ১১ তা নাগাদ পার্থবাবু পৃথাদেবীকে ফোন করে বলেন, রাজ্য সরকার বেতনবৃদ্ধি নিয়ে উস্থির সমস্ত দাবি ইতিমধ্যেই মেনে নিয়েছে, তাই আগামী ২৪ তারিখের আন্দোলন যেন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। জবাবে পরিখাদেবী জানান, এইরকম কোনো সরকারি বিবৃতি তিনি বা তাঁর সংগঠন তখনও পর্যন্ত হাতে পান নি, তাহলে কিসের ভিত্তিতে তিনি বুঝতে পারবেন যে রাজ্য সরকার সব দাবি মেনেছে না মানে নি। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, তিনি এই নিয়ে উস্থির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান।

এর জবাবে পৃথাদেবী জানান, তিনি যেহেতু সংগঠনের একটি অংশ, তাই সংগঠনের সকলের সঙ্গে আলোচনা না করে এই নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারবেন না। এরপর তিনি সংগঠনের কোর কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, শিক্ষামন্ত্রীর পদের উপর পূর্ণ সম্মান দেখিয়ে তাঁরা আলোচনার জন্য বসতে চান। তবে সেই বৈঠকে বেতন-বিশেষজ্ঞদের থাকাটা জরুরি। এই সিদ্ধান্ত জানাতে পৃথাদেবী এরপর শিক্ষামন্ত্রীকে বার দশেক ফোন করলেও তিনি ফোন তোলেননি।

এমনকি, শিক্ষামন্ত্রীকে তিনি হোয়াটস্যাপে ম্যাসেজ করলে, সেই ম্যাসেজ শিক্ষামন্ত্রী দেখলেও কোনো প্রত্যুত্তর দেন নি। এরপরে, উস্থির তরফে শিক্ষামন্ত্রীর আপ্ত সহায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি জানিয়ে দেন যে নম্বর থেকে পৃথাদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল তা শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত নম্বর। সুতরাং, শিক্ষামন্ত্রী কেন ফোনে সারা দিচ্ছেন না, তা তিনিই বলতে পারবেন। আর এর ফলে উস্থির তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে – শিক্ষামন্ত্রীর পদের উপর পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন করে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য ও শিক্ষামন্ত্রীর ডাক পাওয়ার জন্য আগামীকাল দুপুর ২ টো পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে।

এর মধ্যে, যদি শিক্ষামন্ত্রীর তরফে কোনো যোগাযোগ না করা হয়, তাহলে নির্ধারিত কর্মসূচি মেনেই আগামী ২৪ তারিখ আন্দোলনের পথে যাবে সংগঠনটি। কিন্তু সামগ্রিক ঘটনায় রীতিমত হকচকিয়ে গেছে শিক্ষামহল। এতদিন পরে হঠাৎ করে শিক্ষামন্ত্রী ‘রহস্যজনকভাবে’ ফোন করলেনই বা কেন? আবার নিজেই আলোচনার কথা বলে ‘রহস্যময়ভাবে’ এখন আর কোনো সাড়াই বা দিচ্ছেন না কেন? যতক্ষণ পর্যন্ত না শিক্ষামন্ত্রী এই নিয়ে নিজে মুখ খুলছেন – তা এইভাবেই রহস্যে মোরা থাকবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, ঘটনা যাই হোক উস্থির আন্দোলন যে রাজ্য সরকারকে রীতিমত চাপে রাখছে তা কিন্তু মেনে নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!