এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশের জনসংযোগ থেকে শাসকদলের সভা – এবার সবেতেই আমন্ত্রণ পাবেন এই লোকশিল্পীরা

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশের জনসংযোগ থেকে শাসকদলের সভা – এবার সবেতেই আমন্ত্রণ পাবেন এই লোকশিল্পীরা

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধের রাঙা মাটির দেশ বীরভূম সফরে এসে বাউল এবং লোক উৎসবের সূচনা করে বাউল সাধকদের উদ্দেশ্যে দিয়ে গেলেন একগুচ্ছ ভালো বার্তা। এবার থেকে বাউল শিল্পীদের পুলিশের জনসংযোগ ও সামাজিক উন্নয়নের কাজে যুক্ত হওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রায় হাজার খানেক বাউলদের উপস্থিতিতে তিনি মঞ্চে উঠে বললেন,”আমরা যেভাবে পুলিসের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ও রানার্সদের সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ দিয়েছি, তেমনি পুলিসের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের কাজে বাউল শিল্পীদের যুক্ত কর। ওঁদের হয়তো বয়স নেই। দৌড়াদৌড়ি করতে পারবেন না। কিন্তু, অন্য কাজও তো করতে পারবেন।”

পাশাপাশি প্রশাসনের প্রতিটি দপ্তরকেই তাঁদের আগামী অনুষ্ঠানগুলোতে বাউলদের আমন্ত্রণের নির্দেশ দেন তিনি। শুধু তাই নয়,দলীয় নেতৃত্বদেরও তাঁদের জনসভাগুলোতে বাউল শিল্পীদের ডাকার কথা জানান তিনি। এদিনের ইলামবাজারের ভিআইপি মোড়ের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একই মঞ্চে স্থান দেওয়া হয় ১০০ জন জনপ্রিয় বাউল সংগীত শিল্পীকে। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার খানেক বাউল শিল্পীদের জন্য পৃথক মঞ্চ করা হয়।

এঁদের মধ্যে ১২ হন প্রসিদ্ধ বাউল শিল্পীকে সম্মাননা প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। এছাড়া উপহারস্বরূপ তাঁদের হাতে দেওয়া হয় একতারা,সাল,উত্তরীয় সহ আরো অনেককিছু। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাউলদের ‘ভাইবোন’ বলে সম্বোধন করে প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”বাউল ভাইবোনেদের বাদ দিয়ে বাংলাকে ভাবা যায় না। পৃথিবীর কাছে বাংলাকে সবচেয়ে বেশি গর্বিত করেছে আমাদের শিল্পী ভাইবোনেরাই।”

প্রসঙ্গত,বছরের এই সময়টাতেই প্রত্যেক বছর বোলপুরে বাউল এবং লোক উৎসবের সূচনা করতে জেলায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আগের বছরগুলোতে বাউলদের অন্যতম পীঠস্থান জয়দেবের অদূরে টিকরবেতা মাঠে এই উৎসবের সূচনা করতেন তিনি। এবছর জায়গা পরিবর্তন হলেও উৎসবের আত্মা কিন্তু একই রয়ে গিয়েছে। অনুষ্ঠানের সূচনা থেকেই বাউলদের সঙ্গে সুর মেলাতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে।

তবে এদিন অন্য মেজাজেই ছিলেন তিনি। চিরাচরিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে পাওয়া গেল একজন বাউল সংগীতপ্রেমীর ভূমিকায়। মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থলে আসতেই বাউলশিল্পীরা একতারা হাতে নিয়ে ‘তোমায় হৃদমাঝারে রাখব’ গানটি গেয়ে তাকে স্বাগত জানান। মুখ্যমন্ত্রীও তাল মেলান তাঁদের সঙ্গে।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে নানান সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস ঘোষণা করার পর বাউলশিল্পীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন,জয়দেবের কেন্দুলির মেলার সবথেকে বড় গর্ব এই বাউল কীর্তনীয়ারা৷ এঁরা বাংলার সম্পদ। একসঙ্গে এতো লোকশিল্পীদের সমাগম দেশের কোনো প্রান্তে দেখা যায় না। এতোজন বাউল শিল্পীকে নিয়ে এই অনুষ্ঠান সত্যিই বিরল। পাশাপাশি তিনি আর জানালেন,আগে বাউলদের অন্য নজরে দেখা হত।

কিন্তু বাউল শিল্পী ছাড়া বাংলার লোকশিল্প প্রাণহীন। তাই এই বাউল শিল্পীদের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখার জন্যে দু’লক্ষ শিল্পীকে এক হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা জানালেন তিনি। এরপর পুলিশ প্রশাসন এবং সরকারি অনুষ্ঠানে বাউল শিল্পীদের যুক্ত করার নির্দেশও দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী যে বাংলা লোকশিল্পের ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে বারবারই ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে আগেও। তিনি বাউল শিল্পীদের স্বার্থে বাউল বিতান, বাউল অ্যাকাডেমির মতো একাধিক প্রকল্পও চালু করেছেন রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর।

উল্লেখ্য,জেলা পুলিসের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত রাঙামাটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও জঙ্গলমহল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে ট্রফি, বাইক, স্কুটি, LED টিভি, সাইকেল তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং ঘোষণা করেন,”যারা আজ প্রাইজ় পেল, তারা প্রত্যেকে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি পাবে।” এর পাশাপাশি বাউলের হিতেও তাঁদের কাজে নিযুক্ত করার বার্তা দিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে করতালিতে ফেটে পড়ে গোটা সভাস্থল। পুরস্কারপ্রাপ্তদের খুশির সঙ্গে আনন্দের জোয়ারে ভাসেন অনুষ্ঠানে আগত বাউল শিল্পীরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!