এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > এবার ‘সিভিক টিচার’ নিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন সৌমিত্র খাঁ

এবার ‘সিভিক টিচার’ নিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন সৌমিত্র খাঁ


ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বাড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকা দেখা গেল সৌমিত্র খাঁ কে। সপ্তাহ খানেক আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ জানিয়েই ঘটা করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন এই নেতা। তা নিয়ে তো শোরগোল ছিলই।

তারপর দিন দুয়েক আগেও তাঁর বিরুদ্ধে অাদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতাদের টাকার টোপ ফেলে নিজের দলে টানার একটি অভিযোগ তৃণমূলের তরফ থেকে করা হয়েছিল। এবারও সেই সৌমিত্র খাঁ-ই রাজ্যরাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হলেন। বিজেপিতে গিয়েই প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে আক্রমণে সক্রিয় হতে দেখা গেল তাকে।

সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নতুন পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের শিক্ষামহলের সঙ্গে বৈঠক করার পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,রাজ্যের বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলিতে প্রচুর শিক্ষকদের ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণের জন্যে নতুন পরিকল্পনা করা হয়েছে। এবার থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাশ করা ছেলে মেয়েরা স্কুলে পড়াতে পারবেন।

এক্ষেত্রে তাঁদের ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। সময়ান্তে দেওয়া হবে শংসাপত্র। শিক্ষকতার নতুন এই পদের নাম সিভিক শিক্ষক। মুখ্যমন্ত্রী এহেন বক্তব্যের পর বিতর্কের ঝড় উঠে যায় শিক্ষামহল সহ বিভিন্ন স্তরে। সোশ্যাল মিডিয়া সহ বিরোধীমহলেও ব্যাপক সমালোচিত হন নেত্রী। সেই বিতর্কেই আরো একটু উস্কে দিলেন সৌমিত্র খাঁ। ব্রিগেড সমাবেশের ঠিক আগের রাতেই রাজ্যের যুব সমাজের আবেগকে হাতিয়ার করে রাজ্যসরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন তিনি। বললেন,ভারত সহ গোটা বিশ্বের যুবসমাজের প্রধান লক্ষ্যই হল কর্মসংস্থান।

বর্তমানের মূল্যবৃদ্ধির যুগে এটাই দেশের সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই সমস্যা কমানোর বদলে আরো বেশি বাড়িয়ে তুলছে। প্রশ্নে তুলে বললেন,’রাজ্যের সাধারণ মানুষেরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের ভালো ভালো স্কুলে পড়াচ্ছেন। লেখাপড়া শেষ করে এই রাজ্যে দু’হাজার টাকার চাকরি পাবে। এটাই কী পড়ুয়াদের ভবিষ্যত্‍?’ পাশাপাশি আরো বললেন, ‘একজন পিএইচডি করা ব্যক্তি মাসিক ২৫০ টাকার চাকরি করতে পারবে তো?’ এখানেই ক্ষান্ত হননি তিনি।

রাজ্যের তরুণ প্রজন্মের এই ঘোর সংকট থেকে মুক্তি দিতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ। প্রসঙ্গে তুলে ধরলেন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কর্মসংস্থানের পরিস্থিতির কথা। তাঁর মতে,বিজেপি যেসব রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে সেসব রাজ্যে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের হাল এতোটা খারাপ নয়। এটাও দাবী করলেন,তৃণমূল সরকারের জামানায় পশ্চিমবঙ্গের কর্মসংস্থানের অবস্থা এতোটাই বেহাল দশা যে চাকরির জন্য শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের ভিন রাজ্যে যেতে হয়।

উল্লেখ্য, সর্ব ভারতীয় ব্রিগেড সমাবেশ নিয়ে যেখানে তৃণমূলের এতো মাতামাতি, তার ঠিক আগের রাতেই সাম্প্রতিক সবথেকে বিতর্কিত ইস্যু ‘সিভিক শিক্ষক নিয়োগ’ নিয়ে রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে রাজ্যরাজনৈতিকমহলে আরো বেশি চাঞ্চল্য বাড়ালেন তৃণমূলত্যাগী এই নেতা। আজ তৃণমূলের সেই বহু কাঙ্খিত ব্রিগেডে সমাবেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অবিজেপি দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে।

তাঁরা সকলেই এককথায় নেত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এ নিয়েও সৌমিত্র খাঁ গত রাতেই বলেছেন,’কাল ব্রিগেডে অনেক বড় বড় নেতারা থাকবেন। অনেক বড় বড় কথা বলবেন। এরা সবাই এমন একজনের বিরোধিতা করবেন যিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’ তবে সৌমিত্র খাঁয়ের আক্রমণের পাল্টা এখনো এখনো আসেনি শাসক শিবির থেকে। ব্রিগেডের ব্যস্ততা মিটলেই দলত্যাগী এই নেতাকে তৃণমূল যোগ্য জবাব দিয়ে দেবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!