প্রিয়বন্ধু মিডিয়া – সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার ওবিসি (OBC) শংসাপত্র ইস্যুতে বড় পদক্ষেপ নেওয়ার পর থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য বিধানসভায় ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছেন। এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিধানসভায় তীব্র বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিজেপি বিধায়করা এবং প্রতিবাদস্বরূপ কক্ষত্যাগও করেন।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীকে কার্যত তুলোধোনা করেন। তিনি বলেন, “ওবিসি সার্টিফিকেট সংক্রান্ত মামলা যখন সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে বিচারাধীন, তখন কোনও আগাম নোটিস ছাড়াই একতরফাভাবে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বক্তব্য রেখে চোরের মতো পালিয়ে গেলেন।” এরপরই তিনি সরকারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ এনে বলেন, “এই সরকার মুসলিম লিগের সরকার। তারা বেছে বেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক জাতিকে ওবিসির তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে।” শুভেন্দুর দাবি, বিজেপি এই বিষয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবে এবং হিন্দু ওবিসিদের অধিকার রক্ষার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
এর পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা উল্লেখ করেন যে আগামী ১৫ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে মামলার শুনানি রয়েছে এবং সেই দিন বিজেপি আদালতে নিজেদের অবস্থান জানাবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় স্পষ্ট করেন, ওবিসি শংসাপত্র ইস্যুতে ধর্মের কোনও ভূমিকা নেই। আর্থিক অনগ্রসরতার ভিত্তিতে রাজ্য সরকার নতুন করে সমীক্ষা চালিয়ে তালিকা প্রস্তুত করেছে। তিনি জানান, বর্তমানে ওবিসি ‘এ’ বিভাগে ৪৯টি এবং ওবিসি ‘বি’ বিভাগে ৯১টি শ্রেণি রয়েছে, যার সঙ্গে আরও ৫০টি শ্রেণি যোগ করার প্রক্রিয়া চলছে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য মেনে নিতে নারাজ শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিধানসভার স্পিকারের উদ্দেশে একাধিকবার দাবি জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে ভুল তথ্যের প্রতিবাদ করতে চান। কিন্তু স্পিকার তাঁকে কথা বলার অনুমতি না দেওয়ায় উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং প্রথম অর্ধেই অধিবেশন স্থগিত করা হয়। এরপরেই শুভেন্দু এবং অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা প্রতিবাদ জানিয়ে বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওবিসি সংরক্ষণ তালিকায় ৬৬টি জাতির পরিবর্তে নতুন করে ১৪০টি জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। যদিও সরকারের এই পদক্ষেপের স্বচ্ছতা নিয়ে বিরোধীদের সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ভোটের প্রাক্কালে এই ইস্যু রাজ্য রাজনীতিতে বড় বিতর্ক ও বিভাজনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে চলেছে তা বলাই যায়।

 
				
			 
				
			 
				
			 
				
			 
				
			


